চিংড়ির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ বজায় রাখতে পালন ঘের ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে করণীয় বিষয়গুলো নিম্নরূপ-
সুস্থ্য সবল চিংড়ি উৎপাদনের জন্য পরিশোধিত পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য পানি পুনঃউত্তোলন ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি। এখানে নিম্নের বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা উচিত-
অধিক উৎপাদনের জন্য চিংড়িকে চাপমুক্ত রাখা উচিত। কিন্তু শেওলা পরিষ্কার, জাল টানা, ঘের মেরামত প্রভৃতি কাজের জন্য চিংড়ি পীড়নের শিকার হয় ফলে চিংড়ির মৃত্যু হার বেড়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে করণীয় হলো-
চিংড়ির প্রত্যাশিত উৎপাদন পাওয়ার জন্য প্রাকৃতিক খাদ্যের পাশাপাশি ঘেরে সম্পুরক খাদ্য প্রয়োগ করা উচিত। ঘেরে উপস্থিত মোট চিংড়ির পরিমাণের ওপর নির্ভর করে সম্পূরক খাদ্যের পরিমাণ নির্ণয় করতে হবে। এক্ষেত্রে করণীয় বিষয়গুলো নিম্নরূপ-
যেকোনো ধরনের জলজ আগাছা আধা নিবিড় চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে থাকে। কারণ জলজ আগাছা জন্মালে ঘেরের পানির গুণগতমান সহনীয় পর্যায়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই ২-৩ দিন সময় নিয়ে ঘেরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। ঘেরে শতকরা ৩০-৪০ ভাগ আগাছা থাকলে তা গ্রহণযোগ্য তবে এর বেশি থাকলে তা ক্ষতিকর।
চিংড়ি চাষে নমুনায়ন ও পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতি ১৫ দিনে একবার অথবা মাসে ২ বার চিংড়ির নমুনায়ন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। রোগ অথবা বৃদ্ধি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। চিংড়ির নমুনায়নের সময় করণীয় বিষয়গুলো নিম্নের সারণিতে দেয়া হলো-
সারণি: চিংড়ির নমুনায়নের সময় পর্যবেক্ষণের বিষয় ও করণীয়
পর্যবেক্ষণ বিষয় | করণীয় |
---|---|
১. ওজন স্বাভাবিক আছে কিনা ২. পাকস্থলিতে পর্যাপ্ত খাবার আছে কিনা ৩. চিংড়ির দেহে রোগের চিহ্ন আছে কিনা অথবা খোলসে সাদা চাকা দাগ আছে কিনা ৪. অস্বাভাবিক চলাচল ৫. ফুলকা কালো হয়ে গেছে কিনা ৬. লেজ ফোলা বা পানি জমে থাকা ৭. মাংস এবং খোলসের মাঝে ফাঁকা আছে কিনা ৮. খোলস নরম/শক্ত কিনা | ১. মাসে কমপক্ষে ২ বার নমুনায়ন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ২. পর্যাপ্ত পরিমাণ না থাকলে খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে অথবা খাবার না খাওয়ার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। ৩. ভাইরাসের কারণে মুলত এরকম হতে পারে। ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করতে হবে ৪. চিংড়ি পাড়ের নিকট স্থির হয়ে থাকলে বুঝতে হবে কোনো অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পানির গুণাগুণ পর্যবেক্ষণ করে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৫. স্বল্পমাত্রায় চুন প্রয়োগ করতে হবে। ঘেরে হররা/পালা টেনে নিতে হবে। ৬. চিংড়ি আক্রান্তের পরিমাণ বেশি হলে প্রতি বিঘায় ১.৫ কেজি পটাশ পানিতে গুলিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে। ৭. খাবার প্রদানের হার বৃদ্ধি করতে হবে ৮. নরম খোলসবিশিষ্ট চিংড়ি সংখ্যায় বেশি হলে ঘেরে চুন প্রয়োগ করতে হবে। |